The Subtle Art of Not Giving a Fuck

বইটা পড়ে শেষ করলাম। এখন এই বইটার একটা শর্ট রিভিউ দিবো।

এই বছরে এইটা আমার পড়া ২য় বই। আমি গত ১-২ বছর থেকে বই পড়ার অভ্যাস করছি, বেশিরভাগই নন-ফিকশন।

এই বইয়ের লেখক Mark Manson কে আমি ইউটিউবে ফলো করি। উনি লাইফের ব্যাপারে অনেক ভিন্নধর্মী বিষয় তূলে ধরেন। যেমন বিলিয়নিয়ারদের ডেইলি রুটিন ফলো করলেই আমরা বিলিয়নিয়ার হয়ে যাবো না। তাদের ডেইলি রুটিন হলো সবচেয়ে সহজ একটা জিনিস। তারা আসল যে কাজটা করে অনেক বড়লোক হয়েছেন সেই কাজটা রেপ্লিকেট করা অনেক কঠিন, তাই আমরা সহজ জিনিসটাই অনুকরন করি।

আচ্ছা, বই এর ব্যাপারে আসি। সবার প্রথমে এই বই এর নামের অর্থটার ব্যাপারে বলি।

“I don’t give a fuck” একটা ইংরেজী প্রবাদ। এর বাংলা ভাবানুবাদ হবে, আমি এর তোয়াক্কা করি না। আরো সহজে বললে, আমি এটার কেয়ার করি না। বা বাংলায় আরো খারাপ ভাবে বললেঃ “আমি এর ধার ধারি না; চুদি না; চোদে না” –বুঝতেই পারছো।

তো “The subtle art of not giving a fuck” শুনলে হয়তো মনে হতে পারে এই বইটাতে বলা হয়েছে কিভাবে কোন কিছুর কেয়ার না করে সব কিছুর উর্ধে চলে যাওয়া যায়। কিন্তু ব্যাপারটা তা না। প্রথম চ্যাপ্টারেই এটা এক্সপ্লেইন করা হয়েছেঃ

Why you should not give a fuck? But you should!

আমাদের জীবনে অনেক কিছুই চলছে। লেখক বলেছেন সব কিছু নিয়েই মাথা ঘামানো উচিত না, কারন আমরা খুবই অল্প কিছু জিনিসকে প্রাইয়োরিটি দিতে পারবো (give a fuck)। এমন জিনিসের উপরে ফোকাস করতে হবে যা আসলেই দরকার, বা যেটা করলে আমার অথবা আমার প্রিয়জনের লাইফে কোন পরিবর্তন আসবে।

মূল কথা হলো আমাদের ব্যাক্তিগত জীবনে অনেক সীমিত সময়, আর এনার্জি আছে। এই সীমিত সময়গুলো ভূল জিনিসে দিয়ে খরচ না করে, দরকারি জিনিসে খরচ করতে হবে। এখানে লেখক একটা উদাহরন দিয়েছেনঃ- আমি হয়তো কোন কিছুই কেয়ার করি না, কিন্তু যখন দেখবো আমার বাবা/মা’র থেকে কেউ টাকা মেরে দিয়েছে, আমি সেটা অবশ্যই কেয়ার করবো। আমি দিনরাত এক করে দিবো, আর যে এটা করেছে তার লাইফ হেল করে দিবো। তো এখানে Fuck দিতে হবে। তোমার কাছে খুবই লিমিটেড Fucks আছে, আর সেটা বুঝে শুনে দিও।

বইয়ে এইরকমই আরো অনেক ছোট ছোট ফান্ডা ছিলো যেটা আমার দৃষ্টিভঙ্গি চেঞ্জ করে দিয়েছে। আমার Anxiety আরো কমিয়ে দিয়েছে। এখন আমি বই এর একদম শেষ এবং সবচেয়ে মুভিং চ্যাপ্টারে জাম্প করবো।

তুমি একদিন মরে যাবে

এই চাপ্টারে লেখক Ernst Becker এর বই থেকে মৃত্যুর ব্যাপারে কয়েকটা রিয়েলাইজেশন শেয়ার করেছেন।

মানুষ হিসেবে আমরাই একমাত্র প্রানী যারা অতীত আর ভবিষ্যতের ব্যাপারে চিন্তা করতে পারি। আমরা ভাবতে পারি আগে কি করেছিলাম, অথবা কল্পনা করতে পারি, আগের ঘটনাগুলো অন্যভাবে হলে কি হতো। বা ভবিষ্যতে আমরা কি কি করবো।

যেহেতু আমরা ভবিষ্যত কল্পনা করি, কোথাও না কোথাও আমরা অবচেতন মনে নিজের মৃত্যুর কথাও কল্পনা করে ফেলি। আমরা চাই মরার পরেও জেনো মানুষ আমাদেরকে মনে রাখে। আর এ জন্যই মানুষ তার Legecy ধরে রাখার জন্য নানান কাজ করে থাকে।

মানুষ অনেক বাচ্চা কাচ্চা করে বংশধর রেখে যায়। বিল্ডিং বানিয়ে সেটাতে নিজের নাম দেয়। বড় বড় প্রোজেক্ট, প্রকল্প করে। পৃথিবীর সকল সভ্যতার নিদর্শন, বড় বড় স্থাপত্যের মাঝে এই আকাংখাটাই দেখা যায়। যেমন আমাদের বাংলাদেশে শেখ হাসিনা তার পরিবারের সবার নামে কত কত কিছু করে গেছেন। এই সব কিছু মানুষের সেই অমর হবার চাওয়া থেকেই আসে। কোন এক দলের ভবিষ্যৎ অস্তীত্ব রক্ষা করার জন্যই তখন তারা অন্য এক দলের সাথে যুদ্ধ শুরু করে দেয়।

Ernest Becker বলেছেন, আমরা যখন নিজেকে অমর করার জন্য মরিয়া হয়ে পরি, এইটাই আমাদেরকে ভালোভাবে বাচতে দেয় না। বাচতে হলে এই রিয়েলাইজেশনটা আনতে হবে যে নিজেকে অমর করে কোন লাভ নেই। আমরা আসলেই থাকবো না। যখন ফাইনালি এই কঠিন সত্যটা মেনে নিতে পারবো, যে হ্যা, আমি একদিন আসলেই মরে যাবো। তখন আমি রিল্যাক্স হয়ে যাবো, আর কোন anxiety থাকবে না। তখন থেকে আমি লাইফের আসল দরকারি জিনিসগুলোর প্রতি নিজের সময় দিতে পারবো। অন্য মানুষের জন্য কাজ করতে পারবো। নিজের থেকে বড় কোন কিছুতে নিজেকে দিয়ে দিতে পারবো। এই রকম রিয়েলাইজেশন থেকেই মানুষ আর্মিতে জয়েন করে, ধর্ম কর্ম করে, অথবা মুগ্ধর মত নিজেকে আন্দোলনে বিলিয়ে দেয়।

তো এই ছিলো The subtle art of not giving a fuck এর শর্ট রিভিউ। আমি এই বইটা আরো পড়তে থাকবো।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *